|
আমার একটা ব্যাকপ্যাকিং ট্রিপের ছবি। |
ব্যাকপ্যাকিং
কি ? :- আমার মতে
ব্যাকপ্যাকিং হলো ঘুরাঘুরির একটা পক্রিয়া , যেটায় কম খরছে ঘুরাঘুরি আর স্বনির্ভর ভাবে
ঘুরাঘুরি করা যায়।মুলত সবচেয়ে কমখরচে কিভাবে ঘুরা যায় একটা জায়গায় সেটা নিয়ে প্লান
করে ঘুরাই হলো ব্যাকপ্যাকিং। যেখনে একজন ভ্রমণকারী তার সকল জিনিসপত্র এবং খাবার
একটি ব্যাগে ভরে কাধে নিয়ে দির্ঘ সময় স্বনির্ভর ভাবে ঘুরে। এই হলো ব্যাকপ্যাকিং।
এখন
উপরের শিরনাম দেখ অনেকেরই মাথায় আসতে পারে আমি এখানে“ময়লাপ্যাকিং” বলে কি বুঝাত চেয়েছি।আপনি অবশ্যই জানেন
ব্যাকপ্যাকিং কনসেপ্টটি বাংলাদেশে প্রায় নতুন। আরে আমি নিজেই এখন প্রতিদিন দুনিয়ার
ক্যাম্পিং ছবি আর হাবি যাবি ছবি আপলোড করি আমার ফেসবুকে , হয়তো শার্টের কলার তুলে বন্ধু মহলে বলি “শোন আমি গত ৪দিন বান্দরবানের ওই চিপাই
ছিলাম। বহু প্লেসে ক্যাম্প করলেও , ব্যাগে ভরে দুনিয়ার জিনিস নিয়ে ৪-৫ দিন
বান্দরবান ঘুরে আসলেও।অল্প কিছু বছর আগে কলেজ লাইফেও আমি চিন্তা করিনাই আমি কোনদিন
এভাবে ঘুরবো। সো যেটা বলতে চাচ্ছি সেটা হলো আমাদের মত ছোট্ট এ দেশে ব্যাকপ্যকিং
আসছে বেশি দিন নই। আমার মত নতুনদের কাছে তাই আনেক কিছুই অজানা। যেটা আমি ধীরে ধীরে
শিখছি,আমরা ধীরে ধীরে শিখছি।তাই ব্যাকপ্যাকিং এর ময়লাপ্যাকিং/ট্রাসপ্যাকিং
সম্পর্কেও সবার জানা দরকার। এটাও নতুন আমাদের , কিন্তু দুটাই একটা অপরটার সাথে
জড়িত।
ময়লাপ্যাকিং
:- রাঙ্গামাটির একটা
ট্যুরে আমি এক বড় ভাইয়ের সাথে শুভলং যাওয়ার প্লান করলাম। অনেক আগের ... ভ্রমণে আমি
তখন একেবারে মোড়ক দিয়ে প্যাকেট করা মাল। রিজার্ভ বাজার এর একটু পরের খেলার মাঠের
ঘাট থেকে নৌকা ছেড়ে দিচ্ছে , এমন সময় ওই বড় ভাইয়ের ভৈ দোড় পাশের একটা দোকানে।এদিকে
নৌকা ছেড়ে দিল , আমি ভাবলাম ইমার্জেন্সি কিছু হইছে হয়তো থাক পরের নৌকায় যাবো।
কিন্তু মাথার মেজাজ খারাপ হয়ে গেল যখন দেখলাম উনি বড় একটা পলিথিন কিনতে এরকম করলো।
আরো খারাপ লাগলো যখন উনি পলিথিনটা আমার ব্যাগে ঢুকিয়ে দিয়ে বলল “এটা রাখ বেটা কাজে দেবে” আমি বললাম “আমি ভাই বাসে বোমি করিনা আর এটাতো বিশাল
একটা বোট।” উনি মুচকি হাসলেন। বিরক্তি নিয়ে আমরা
পরের বোটে শুভলং গেলাম। ঝর্ণায় গেলাম। গোসোল করলাম আর ১০টাকার পেকেট কেক খেয়ে খালি
প্যাকেট আমি নিচে ফেলে দিলাম।দেখি ভাই আমার সেটা টুপ করে নিয়ে পকেটে ডুকিয়ে ফেল্ল।আমি
তারাতারি অন্য কেকের প্যাকেটটা দেখলাম।নাহ প্যাকেটের গায়ে কোন ফ্রি অফার নেই।একটু
অবাক হলাম।এরপর যখন আগের বোটের টুরিস্টরা ঝর্ণা ছেড়ে চলে গেল তখন ভাই দেখি ঝর্ণার
আসপাশ থেকে বিভিন্ন প্যাকেট আর জিনিস পত্র কুড়াতে লাগলো। আমি ত “থ”
বেটা করে কি!! টোকাইদের মত ময়লা কুড়াচ্ছে। আমাকে আবার ধমক দিয়ে কুড়াতে বলল। বড় ভাই
... তাই ভয়ে কুড়াতে লাগলাম। আশপাশের যারা ছিল সবাই অদ্ভুত চোখে তাকাতে লাগলো
আমাদের দিকে। যখন কুড়ানো শেষ তখন ভাই কুড়িয়ে নেওয়া সব জন্জাল আমার কাছে দেওয়া
পলিথনে ভরে ফেল্ল। আমি আর না থাকতে পেরে প্রশ্ন করলাম “ইব্রাহিম”
ভাই ঘটনা কি? এসব পাগলামি কেন করতেছেন ? উনি তখন বললেন “সজল ঝর্নাটা তোর কাছে এখন সুন্দর
লাগতেছে না আগে সুন্দর লাগছিল। আমি দুর ভাই ঝর্ণা তো ঝর্নার মতই .... বলতে বলতে
ঝর্ণার দিকে তাকিয়ে আমি ওই দিনে দ্বিতিয় বারের মত “থ” । কি যেন একটা পরবির্তণ হয়ে গেছে।
ঝর্ণাটাকে আগের থেকে বেশি সুন্দর আর প্রাণবন্ত লাগছে।
প্রশ্ন
নিয়ে যখন ইব্রাহিম ভাইর দিকে তাকালাম তখন উনি বলছিলেন এটা হলো ট্রাশপ্যাকিং।সত্য
বলতে ট্রাশপ্যাকিং ব্যাপারটা তখনো আমি বুঝিনি , যদিও ভাই আমাকে ওই পুরা ট্যুরে
ব্যাকপ্যাকিং আর ট্যাশপ্যাকিং সম্পর্কে বুঝালো। তবে আমি ব্যাপারটা খুব শিগ্রই
বুঝছি।অসাধারণ কিছু মানুষের সাথে ঘুরে ঘুরে। বিভিন্ন ট্যুরে ফয়সাল ভাই , চন্দন ভাই
, রুপাদির মত লোকজনের কান ঝালাপালা করা বক্তব্য শুনতে শুনতে আমি এডাপ্ট করলাম।জিনিসটার
প্রয়োজন উপলব্দি করলাম।এখন আমি আমার গ্রুপের সবাইকে বকি ময়লা কালেক্ট করতে বলি। নিজে
করি। এটায় হলো ট্রাশপ্যাকিং।