ভারতের বিভিন্ন শহর নিয়ে
ভ্রমণ ব্লগ লিখে আসছি আজ বেশ কদিন। কলকাতা , দিল্লী , আগ্রা
, জয়পুর , আজমীররে পর
সর্বশেষ আমি হামতাপাস ট্রেকিং নিয়ে লিখেছিলাম। হামতা পাসে ট্রেকিং এবং ক্যাম্পিং আমরা মানালী
ট্যুরের মাঝেই করেছিলাম। আজ বসলাম মানালী নিয়ে লিখত। আগের লিখাগুলো পড়তে এ
ব্লগসাইটে ঘুরতে পারেন বা উপরে লিখিত শহর গুলোয় ক্লিক করলেই হবে।
১৩/০৯/২০১৪
চন্দিগড়
থেকে আমরা সেই গতকাল রওনা দিয়েছি। সন্ধ্যায় HRTC এর বাসে চড়ে বসেছিলাম , চন্দিগড়ে
প্রচুর হাটা – হাটি , সাইট সিইং এবং এর আগের ২ দিন টানা ট্রেন ভ্রমনে আমরা প্রায়
অর্ধ মৃত ছিলাম। বাসে উঠেই মড়ার মত ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। চন্দিগড় – মানালী হাইওয়ের
অনেক কুখ্যাত গল্প শুনেছি আগে। ভাগ্যিস ঘুমেই কাটিয়ে দিলাম সারা রাত , রাস্তার
ভয়ংকর রুপ দেখতে হয়নি। তবে আধো ঘুমে মাঝে মাঝে চোখ অল্প একটু খুলে বাইরে তাকিয়েছি
ঘোলা ভেজা কাঁচের ভেতর দিয়ে । কখনো পাহাড়ের ভেতরদিয়ে ট্যানেল বা কখনো সুরু বাঁক
দিয়ে গাড়িটা রাগি ষাঁড়ের মত এগিয়ে যাচ্ছিল তখন চেখ আবার বন্ধ করে দিয়েছিলাম। যেন
কিছু হলে না দেখি , দেখে মরার থেকে না দেখে মরা ভাল। চোখবন্ধ করা অবস্থায় শুনলাম
বাসের ভেতর কেউ একজন তাদের নিজম্ব ভাষায় দোয়া দুরুদ পড়ছে , ভাষাটা হিন্দি নয় কিন্ত
মধুর। এ দোয়া পড়ার শব্দ সাথে বাসের যান্ত্রিক শব্দ ব্যাতিত আর কোন শব্দ ছিলনা। সরি
আমার পাশের সিটের আমার ভ্রমণ সঙ্গী সাফায়েতের নাক ঢাকার শব্দ আসছিল। আমার খুব
প্রিয় এ মানুষটি জীবনে আর কিছু পারুক আর না পারুক দুটো জিনিস খুব ভাল পারে। একটি
যে কোন পরিস্থিতিতে ঘুমোতে পারা অন্যটিও যে কোন পরিস্থিতিতে তার টয়লেট ধরে।
মানালীর
৩০-৪০ কি: মি: আগে গভীর রাতে আমাদের একবার বাস পাল্টাতে হলো। কি যেন সমস্যা
হয়েছিল। অন্যবাস করে যখন মানালী বাস স্টেন্ডে পৌছলাম তখন ভোরের আলো ফুটতে ২০-৩০
মিনিট বাকি। বাসের আরামদায়ক সিট এবং বন্ধ দরজা খুলে নিচে নামতেই দেখি আমার হাত এবং
পা জোড়া আমার মস্তিস্কের নির্দেশ ভুলে কাঁপাকাপি করছে। নেমক হারামের দল চারওটা।
কারণও অবশ্য ছিল। অতি চালাক আমি চন্দিগড়ের ২৩-২৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা দেখে হাপ
প্যান্ট আর নরমাল টির্শাট পড়ে বাসে উঠেছিলাম। বাস যখন এ শ-দুশো কিলোমিটার পার করে
২০০০ মিটার বা ৬৫০০ ফিট উচ্চতায় এলো তখন তাপমাত্রা নেমে ৭-৮ ডিগ্রি হয়ে গিয়েছিল।
এত্ত খুশি ধরে রাখতে না পেরে তারা নাচানাচি করছিল। বাস থেকে নামতেই ঢাকার
সায়েদাবাদের মত অবস্থা হলো। দালাল , হোটেল র্কমচারী এবং সয়ং মালিকেরাও হাজির শেষ
রাত্রির খদ্দের ধরতে। টানা হেচড়া শুরু করে দিল তাদের হোটেলে যাওয়ার জন্য , যেন
আমরা তাদের খুব আপনজন বহুদিন পর তাদের শহরে এসেছি থাকতে তাই কার বাসায় নেবে প্রথমে
তার প্রতিযোগিতা। ভারতে প্রচুর ঘুরাঘুরির ফলে দালাল কন্ট্রোলে মুটামুটি হাত পাকিয়ে
ফেলেছি। কয়েকজনকে ছাড়িয়ে , হোটেল আগে বুক করা আছে বলে পাশকাটিয়ে গটগটিয়ে মলরোডের
দিকে হাটা দিলাম। জানতাম অন্তত ২-৪ জন দালাল পেছনে আসবে। এলোও , তাই একসাইডে নিয়ে
দামাদামি শুরু করলাম। প্রথমজন ১০০০ রুপি হাকলো আমি ৩০০ রুপি বললাম । এভাবে
দামাদামি করতে করতে একজনের দাম এবং হোটেলের ছবি পছন্দ হলো। ৪০০ রুপি প্রতিদিন ১২টা
থেকে ১২টা। কিন্ত হোটেল একটু ভেতরে। “রাস্তা দিখাও তুমহারা হোটেলকা” বলে হোটেল
মালিকের পেছনে পেছনে রওনা দিলাম। মলরোডের ভেতরদিয়ে হাটিয়ে , শহরদিয়ে হাটিয়া হালকা
উঠতি একটা রাস্তাদিয়ে হাটিয়ে শেষমেষ সে আমাদের তার হোটেলে আনলো এবং এত ভেতরে হওয়া
শর্তেও হোটেলটা দেখা মাত্রই ভাল লেগে গেল। ২০৭ নম্বর রুমে আমাদের ঢুকিয়ে দিয়ে সে
আবার বাসস্টেন্ডের দিকে ভৌ দৌড় দিল খদ্দের ধরতে। রুমটা ভালই ছিল। র্কাপেট মোড়া ,
রাস্তার পাশে এবং ডাইনিং , টিভি সহ ফার্নিসড রুম ছিল। তবে এতই টার্য়াড ছিলাম
কোনমতে ব্যাগ ছেড়ে নরম বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। মাথায় খেলছিল হোটেলের ওপাশ থেকে কি
যেন বিশাল একটা উকি দিচ্ছিল।
ঘুম
ভাঙার সাথে সাথে বুঝলামনা কই আছি। একটু ঝাকাঝাকির পর সব মনে পড়ল। আর প্রচন্ড
ঠান্ডায় নাকদিয়ে নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। কম্বলের মায়া ছেড়ে প্যান্ট আর টি-র্শাট
পড়ে ক্যামেরাটা নিয়ে হোটেল পরিদর্শণে বের হলাম। হোটেলের প্রতিটা ফ্লোরে একটি করে
বিশাল বারান্দা আছে আরাম কেদারা সহ। দেখা মাত্রয় মাথায় আসলো এ চেয়ারে বসে ঔই দুর
সাদা বরফ ঢাকা পাহাড় দেখতে দেখতে এক কাপ চা না খেলে জীবন বৃথা এরপর সোজা ছাদে উঠে গেলাম।
ছাদ বিশালই। কিন্ত পানি গরম করার যন্ত্র , কাপড় শুকানোর তার আর এক বিদেশির
ক্যাম্পিং এর জন্য খুব অল্প জায়গাই খালি আছে। কিন্তু হোটেলের চারপাশের ভিউ
অসাধারণ। একদিকে পাইন গাছের বন একদিকে পুরো মানালী শহর আর বাকি সবদিকে পাহাড় সারি।
কিছু সবুজ পর্বত কিছু সাদা। তারাতারি ক্যামেরাটা বের করে ছবি তুলে ফেল্লাম।
আবহাওয়া খুব খারাপ ছিল। মানালীর উপরদিয়ে একটা ছোট স্ট্রোম যাচ্ছিল তখন , কদিন আগে
নাকি হালকা তুষারো পড়েছে।
|
ছবি:-
ছাদ থেকে পাহাড় সারি। |
|
ছবি:-
ছাদ থেকে মানালী শহরের পেছনের পাহাড়। |
সাফায়েতও
চলে এসেছিল ছাদে , বেশ কিছুটা সময় ছাদে কাটিয়ে বিদেশি পর্যটকটার সাথে হালকা চ্যাট
করে নিচে নেমে গেলাম আমরা। আবহাওয়ার কারণে চারদিকে অন্ধকার ছিল , তাই সময় খেয়াল
করিনি। প্রায় দুপুর হতে চললো। তাড়াতাড়ি গোসোল করে পরিস্কার হয়ে খেতে বের হলাম।
হোটেল র্কমচারি বলল তাদের এখানে খাবার পাওয়া যাবে। কিন্ত আমরা বাইরে খাবো ডিসিশন
নিয়ে মলরোডের বিপরিত দিকে হাটা দিলাম।
|
ছবি
:- আমাদের হোটেল। |
হোটেলের
পেছনদিক দিয়ে পাহাড় বাওয়া শুরু করলাম। উদ্দেশ্য দুটো। একটি এক্লেমাইজেশন করা ,
যেহতু কাল থেকে আমরা পাহাড় বাইবো আর প্রায় ১৫০০০ ফুট উঠবো। আর দুই নম্বর কারণ ছিল
আমাদের হাতে রাব্বী ভাইয়ের জিপিএস। জিপিএসে দেখাচ্ছিল “হাদিম্বা” মন্দির ওদিকে তাই
ওদিকে হাটা দিলাম। পথে পাহাড়ী মানুষের আধুনিক জীবন যাপন আর দেবশিশুদের স্কুল থেকে
বাসায় ফেরা দেখছিলাম। মানালির সবচেয়ে সুন্দর কি জিনিস ? প্রশ্ন করলে আমি বলবো এ
শহরের শিশুরা। একেকটা যেন দেবশিশু। মায়া ভরা চেহারা প্রতিটা বাচ্চার দেখলেই গাল
টিপে আদর করতে ইচ্ছে হয়। উঠতে উঠতে যখন আমরা ক্লান্ত ঠিক তখনি একটা ধাবা পড়লো পথে
ঢুকতে গিয়েই সুন্দরী মহিলা সামনে পড়লো। পথ দেখিয়ে আমাদের ভেতরে বসতে বলল। মহিলাটা
খুব সুন্দর ছিল। সাফায়েত আর আমি বাংলা ভাষায় তার রুপের প্রশংস করছিলাম ফিসফিসিয়ে।
আর ঠিক তখনি পিচ্ছি একটা বাচ্চা “আম্মি জান” বলে তার কোলে লাফিয়ে উঠলো আর আমাদের
মন ভেঙ্গে দিল।
মেনু
মুখস্ত বলে গেলেন আন্টিটি। (বাচ্চা গুলো কে দেখার পর থেকে “বেহেন” থেকে উনাকে “আন্টি”
ঢাকা শুরু করলাম।) বাচ্চাটি দেখি মার সাথে মেনু মুখস্থ করছে। নাম জিগ্যাসা করতে
বলল “ মেরি নাম আইয়ুস হ্যে” । নাস্তা / লান্চে আমরা আন্টির রোটি , আলুর দম আর
ডালের থালিটার অর্ডার করলাম। থালি সিস্টেমটা ভারতে আমরা সবচেয়ে প্রিয়। কম খরচে পেট
পুরে খাওয়া যায়।
|
ছবি:-
আমার থালি। |
এ
ধাবা ছোট হলেও প্রচুর মানুষ খেতে আসে আর ইউরোপের ব্যাকপ্যাকাররা বেশি। আমরা শহরের
যে দিকটায় ছিলাম সেদিকটায় ব্যাকপ্যাকার , ট্রেকারদের আনাগুনা বেশি দেখলাম। ভালই
লাগছিল। আর আন্টির হাতের রান্নার ভক্ত হয়ে গেলাম একটু খেয়েই। উনার হাতের রান্নাটা
জোস। আর ডিসিশন নিয়ে ফেল্লাম যতদিন মানালী আছি ওনার হাতের রান্নাই খাবো। ওনাকেও
এটা বলাতেই দেখলাম উনি একটু লজ্জা পাচ্ছেন। ধাবায় অন্যান্য গেস্ট আসায় আমরা
আন্টিকে পটিয়ে দুটো চেয়ার বাইরে এনে পাইন বন দেখতে দেখতে আয়েস করে দুকাপ চা মেরে
দিলাম। আয়ুস আর তার বড় ভাইয়ের সাথে গল্পও করলাম।
|
ছবি:-
চা খেতে খেতে স্বর্গ দেখি। |
|
ছবি:-
আয়ুস আর তার বড় ভাই। |
আন্টির
কাছে বিল চাইলাম। দেখলাম দুটো থালি দুকাপ চা আর একটি ডিম মামলেট মিলে বিল আসলো মাত্র
১৫০ রুপি। এত্ত সস্তায় পেট পুজো করে আমরা আবার পাহাড় বাইতে শুরু করলাম। পাইন বনের
ভেতরদিয়ে রাস্তা করা আছে একেবারে মন্দির পর্যন্ত। একটু উপরে উঠে পেছন ফিরে দিখি
আইয়ুসরা হাত নেড়ে শুভেচ্ছা যানাচ্ছে। আমরাও হাত নাড়লাম আর ক্যামেরা বেরকরে তাক
করতেই ছোটটা দৌড়ে পালাল আর বড়টা লাফঝাপে ব্যাস্ত হয়ে গেল।
|
ছবি:-
উঠার রাস্তা থেকে আইয়ুসদের ধাবা। |
এ
রাস্তাটা জোস ছিল। সাধারণত টুরিস্টরা গাড়ীর রাস্তা বা সিএনজি করে মন্দিরে আসে।
আমরা বনের ভেতর দিয়ে এগুলাম। এবং অসাধারণ রাস্তা ছিল ওটা , গাছে ভরা। পাখির
কিচিরমিচির তো লেগেই ছিল।
|
ছবি:-
বনের ভেতরের গাছের বহর। |
একসময়
হুস করে আমরা বন থেকে মূল রাস্তায় উঠে গেলাম। এখানে প্রচুর প্রেয়ার ফ্লাগ লাগানো
জায়গায় জায়গায়। প্রচুর মানুষ এবং হকারের দোকান। আমরা মন্দিরে ঢুকার রাস্তাই একটা
ম্যাপ দেখলাম বিশাল। টুরিস্টদের জন্য। পুরো মানালির ম্যাপ। যেহেতু আমরা মানালীকে
ব্যাসক্যাস্প বানিয়েছি হামতা পাস ট্রেকের জন্য সেহেতু আমাদের প্লানে শুধু ট্রেকিং
এবং ক্যাম্পিং ছিল কিন্ত মানালী ঘুরার সুযোগ আসায় আমরা ওই বড় ম্যাপটা দেখে প্লান
করতে বসে গেলেম আজ কোথায় কোথায় যাব। ম্যাপটার পাসেই একটা হকারের দোকান ছিল। চুড়ি ও
আনুসাংঙ্গিক জিনিস বিক্রয় করছে একটা তরুনী। ট্রেডিশনাল ড্রেস পরা। মেয়েটা এতই
সুন্দর ছিল আমি প্রথমবার দেখার পর ২য় বার আবার তাকাতে হলো। মায়া ভরা চেহারাটা আজো
মনে ভাসে। হাদিম্বা ছাড়াও রাস্তায় অনেক মন্দির পড়ে ছোট ছোট। ঘন্টা আর আইবেক্স এর
শিঙ চোখে পড়লো অনেক। কতগুলো হরিণরে শিঙও দেখলাম যত্রতত্র।
|
ছবি:-
শিং ওয়ালা জন্তুগুলোর জন্য মায়া হচ্ছিল। |
|
ছবি:-
ঘন্টা। |
হাদিম্বা
মন্দিরের গল্প অনেক শুনেছি। কাচে গিয়ে ওরকম কিছু মনে হয়নি। সুন্দর আর বেশ পুরোনো।
এখানেও প্রচুর প্রানীর শিং পড়ে থাকতে দেখলাম।
|
ছবি:-
হাদিম্বা মন্দির। |
হাদিম্বাতে
একটু বসে কয়েকটা ছবি তুলে আমরা পাশের পার্কে বা বনে ঢুকে গেলাম। এক মহিলা ৫ রুপি
নিল জনপ্রতি। উনি নাকি টিকিট বেচে। মন্দির থেকে আমার কাছে বনটাই ভাল লেগেছে।
পরিস্কার এবং প্রচুর ট্রেইল রয়েছে। সুন্দর একটা জায়গা সময় কাটানোর জন্য।
|
ছবি:-
পার্কের ঢুকার গেট থেকে হাদিম্বা। |
|
ছবি:-
পার্কের ভেতরে গাছের সারি। |
|
ছবি:-
বিশাল একটা পাথরের সামনে আমি। |
|
ছবি:-
এরকম কিছু পাথর ছিল ভেতরে। |
পার্কের
ভেতরে আমি আর সাফায়েত ছাড়া আর কেউ তেমন ছিলনা। আমরা এদিক ওদিক হাটাহাটি করছিলাম।
|
ছবি:-
হিডেন ট্রেইল। |
|
ছবি:-
একটা অদ্ভুত গুহা। |
পার্ক
ঘুরার পর আমরা আবার নিচে নেমে গেলাম। কিছুক্ষন হকার মার্কেটে শপিং করলাম। এক কেজি
আপেল কিনেছিলাম ৫০ রুপি দিয়ে। খেয়ে মনে
হচ্ছিল মধু। এত মিষ্টি আর রসালো আপেল আমি আগে কখনো খাইনি। ( পরে ট্রেকিং এবং
ক্যাম্পিং এর সময় এ আপেল কিনে নিয়ে না যাওয়ায় বেশ আফসোস করেছিলাম। চুল ছিড়েছিলাম
আমরা )
এর
পরে হাতে সময় কম থাকায় আমরা সোলাং ভ্যালি আর যায়নি হাটা দিলাম মলরোডের দিকে। পথে
একটা রাফটিং এর দোকান দেখলাম। ভেতরে ঢুকে কথা বললাম। মাত্র ১৫০০ রুপিতে রাফটিং করা
যায় যেনে খুশিই হলাম। আমরা হামতা পাসে যাব বললাম। তিনি হামতার গল্প বললেন আর কিছু
তথ্য দিলেন। ফিরে এসে রাফটিং করবো বলে বিদায় নিলাম আমরা। এরপর সুন্দর শহরটা ঘুরে
মলরোডে চলে আসলাম।
|
ছবি:-
মল রোডের আগে বাজার। |
আমরা
মলরোডে কিছুক্ষন ঘুরলাম। বসে বসে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে আগত টুরিস্টদের দেখলাম।
বাদামী চামড়া হওয়াতে আমরা ফকির , হকারদের অত্যাচার থেকে বেঁচে গেলাম। মল রোডে
প্রচুর সাদা চামড়ার টুরিস্ট। আমাদের লোকাল ভেবে তার চোখ পড়লেই মাথা বাউ করে। আমরাও
মিষ্টি একটা হাসি ফেরত দিই।
|
ছবি:-
মল রোডের শেষ প্রান্ত। |
|
ছবি:-
মল রোড। |
আমার
ভারতের মল রোডগুলো দারুণ লাগে। মানুষ এসে বসে , কথা বলে। শপিং করে। কোন ঝামেলা নেই
, গাড়ি নেই , শব্দ দুষন নেই। এখানে শীতের ডাউন জ্যাকেট আর গ্লাবস সহ সস্তায় অনেক
ট্রেকিং গিয়ার পাওয়া যায়। আমরা কিছু ট্রেকিং গিয়ার শপে টু দিলাম আর এটা ওটা দেখতে
লাগলাম। ব্রান্ডের জিনিস গুলোর দাম দেখে পকেটের মানিব্যাগটা চাপড়ে মাথা নাড়তে
নাড়তে বেরিয়ে এলাম।
আমরা
ঠিক করেছিলাম মলরোড ঘুরে আমরা হট স্প্রিং ঝর্ণাটা দেখতে যাব। হেটে হেটেই রওনা
দিলাম। জিপিএসে দেখলাম বেশি দুরে নই। হাট শুরু করলাম। আমরা বাস স্টেন্ড পেরিয়ে
নিচে নেমে গেলাম পথে কিছু বিস্কিট আর ব্যাটারি কিনলাম। রাত হয়ে যাবে আসতে আসতে
তাই। সাফায়েত ভাই মানালী লিখা একটা সাইন বোর্ডের সামনে দাড়িয়ে গেল যখন আমরা মানালীর
সংযোগ ব্রিজের উপর উঠলাম , ছবি না তুলে পারলামনা তার আর সেটা ব্লগেও দিলাম নইতো
বেটা আমায় মারবে নিশ্চিত। পুরো ব্রিজে প্রেয়ার ফ্লাগ লাগানো। সুন্দর একটা বিকেল
ছিল। নিচ দিয়ে বিয়াস বরফ গলা পানি বয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
|
ছবি:-
সাফায়েতের পোজ মারা ছবি। |
ব্রিজ
দিয়ে পার হয়ে আমরা যখন উপরদিকে যাওয়া শুরু করলাম তখন আসল বিস্ময় চোখে পড়লো। কি
সুন্দর প্রকৃতি। রাস্তার পাশে পিলার টাইপ আছে যেটায় বসে বসে প্রকৃতি দেখা যায়।
মূহুত্বে এ জায়গাটা আমার প্রিয় একটি জায়গায় পরিণত হল। এখান থেকে নদীর পাশে পাইন বন
দেখা যায় , এখান থেকে দুরে সবুজ – ধুসর এবং সাদা পাহাড় দেখা যায়। আর বিয়াস নদীতো
তার রুপ ছড়িয়ে সামনে বসেই ছিল। আমরা দুজন বেশ কিছুক্ষন নদীর পাড়ে বসে ছিলাম।
|
ছবি:-
কি সুন্দর আমাদের বসুন্ধরা। |
|
ছবি:-
জিপিএস রিডিং। |
|
ছবি:-
বিয়াসের পাড়ে। |
রাস্তায়
বসে থাকার সময় হটাৎ উল্টো দিকের কিছু লোক আমাদের দিকে হাত নাড়লো। না চিনেই আমরা
হাত নাড়লাম। কাছে আসতেই বুঝলাম এরা আমাদের সেই কলকা মেইলের সহযাত্রী। একসাথে আমরা
চন্দিগড় র্পযন্ত এসেছি। চন্দিগড় রেস্টরুমে আমরা এদের সাথে ট্রেক নিয়ে গল্প করেছি।
তাদের চন্দ্রকাহানি ট্রেকে যাওয়ার কথা। জিগ্যাসা করে জানলাম স্নো স্ট্রোমের কারণে
তারা ট্রেক বাতিল করেছে , এখন তারও হয়তো হামতা যাবে। তবে ট্রেক লিডার এখনো
চন্দ্রকাহানি যেতে চাই। তাদের গুডলাক উইস করে রওনা দিলাম , তারাও আমাদের ট্রেকের
জন্য গুডলাক বলল আর গাইড – পোর্টার ছাড়া যেতে আরেকবার ভেবে দেখতে বলল।আমরা একটা
সুন্দর হাসি দিয়ে বিদায় নিলাম। পথে একটা ছোট ঝিরি পড়েছিল।
|
ছবি:-
রাস্তার পাশে ছোট একটা ঝিরি। |
ব্রিজের
পর রাস্তা বেশি নয়। কিনতু হাতের ঢানে একটা পাহাড় দিয়ে উঠে গেছে মেইন হাইওয়েকে
ফেলে। আমরা উঠা শুরু করলাম। এবং পথটার মজা নিচ্ছিলাম। পাইন বন , বিশাল গাছ আর
পাহাড়ী মানুষজন দেখে দেখে ভালই উঠছিলাম। উপর থেকে মানালী দেখা যায়। দুরে পাহাড়ের
উপর অনেক গ্রাম। পথে আপেল বাগান পড়লো অনেক। সুন্দর আপেল ঝুলে আছে।
|
ছবি:-
আপেল গাছ। |
একজন
মহিলা বড় একটা খরগোস নিয়ে নিচে নামছিল। আমরা রিকোয়েস্ট করে খরগোসটার সাথে ছবি
তুললাম। এরপর যখন সামান্য এগুলাম রাস্তার পাশেই বিশাল একটা পাথর খন্ড দেখলাম যেটা
প্রেয়ার ফ্লাগ , মোম ইত্যাদি দিয়ে সজ্জিত বুঝলাম পাথরটার ধর্মীয় কোন ব্যাপার আছে।
তাই দ্রুত কয়েকটা ছবি তুলে উপরের দিকে রওনা দিলাম।
|
ছবি:-
রাস্তার পাশে বিশাল পাথরটা। |
আমরা
যখন মন্দির বা ভিনাসাথ গরম পানির র্ঝণায় পৌছলাম তখন প্রায় সন্ধ্যা। তবে এত্ত কষ্ট
করে এটা দেখতে আসার কোন মানে হয়না। সরাসরি গরম পানির ঝিরিতে যাওনা নিষেধ। পুরহিতদের
হম্বিতম্বি। মূল র্ঝনাকে তারা একটা বিশাল বাথটাবে পরিণত করেছে। গোসোল করার
উদ্দেশ্যে ভেতরে গেলাম , কিন্ত ওখানে বয়স্ক , যোয়ান এবং বাচ্চা কাচ্চা সবাইকে
একটাবে গোসল করতে দেখে আমাদের গোসলের মন উঠে গেল। পাশেই মেয়েদের টাব ওখান থেকে
কিচির-মিচের শুনা যাচ্ছিল আমরা মন্দিরের ভেতরে একটু বসে বেরিয়ে গেলাম। এখানে থাকার
মানে হয়না। গরম পানি হোটেল রুমের ট্যাপেও আছে।
|
ছবি:-
গরম ঝিরির পাশের মন্দির। |
মন
খারাপ করে জুতো জমা যেখানে দিয়েছিলাম সেখান থেকে সংগ্রহ করে আশ-পাশ দেখতে লাগলাম।
এবং একটু হাটতেই একটা ছোট গ্রামের ভেতরে ঢুকে গেলাম। গ্রামটা অসাধারণ। বিদেশী
টুরিস্টরা দেখলাম এ গ্রামের অতিথি। এবং স্থায়ী লোকজন সবাই ট্রেডিশনাল ড্রেস পরা ।
গ্রামটা মুহুত্বে মন ভাল করে দিল। আমরা একটা ঘরের টেরাসে উঠলাম আর ঠিক গ্রামের
পেছনে দেখে অবাক হয়ে গেলাম। বরফ ঢাকা পাহাড় দেখা যাচ্ছিল পেছনে। গ্রামটা যেমন
সুন্দর তেমনি মানুষগুলো। মুহুত্বে আমরা বুঝে গেলাম সোলাং ভ্যালির মত টুরিস্ট স্পটে
না যাওয়ার ডিসিশানটা ভাল ছিল। আমরা এখানের মানুষ , ঘরগুলো আর রাত্রির সময়টা উপভোগ
করতে লাগলাম। ভিনসাতের এরিয়াটা রাত্রেই সুন্দর , আমি বিয়ার বার বা স্পা এর জন্য
বলছিনা। এ জায়গাটা সত্যিই খুব সুন্দর রাতের সময়। গ্রামটা যেন জেগে ওঠে রাতে।
|
ছবি:-
সুন্দর গ্রামটার কিছু ঘরবাড়ী। |
আমরা
একটা ধাবায় ঢুকে নাস্তা সারলাম এবং আশপাশে ঘুরতে লাগলাম । আসাধারণ একটা জায়গা আর প্রচুর ট্রেকিং
আউটডোর গিয়ার শপ আছে। স্নো বুট থেকে শুরু করে স্কি এর সব উপকরণ এখানে কিনতে এবং
ভাড়ায় পাওয়া যায়।
|
ছবি:-
রাতের ভিনাসাত। |
|
ছবি:-
গিয়ার শপে ক্লাইমবিং গিয়ার। |
আমরা
অন্ধকারে লাইট জ্বালিয়ে উল্টোপথে হাটা ধরলাম। পথে যতগুলো গিয়ার শপ পড়লো টু মারলাম।
মাল রোডে যখন আবার আসলাম তখন প্রায় রাত ৮টা। প্রচুর মানুষ তখন মল রোডে। হকারে
ভর্তি। আমরা আইসক্রিম থেকে শুরু করে নানা রকম খাবার খেলাম। সাফায়েত একজোড়া গ্লাভস
কিনলো আর আমি একটা ডাউনের ইনার। রাতে ডিনার আমরা ফুতপাতের এক অদ্ভুত দোকানে করলাম।
এ কার্ট টাই মাছের ঝাল ফ্রাই থেকে চিকেন টিক্কা সব পাওয়া যায়। আমরা দুটো মাছ আর
দুটো চিকেন অর্ডার করলাম। আমাদের সামনেই কেটে কুটে ফ্রাই করলো। পেট পুরে ডিনার করে
আমরা আগামী কালের ট্রেকিং এর জন্য রসদ কিনলাম একটা দোকান থেকে। নুডুর্লস , চিপস ,
বিস্কিট স্যুপ ইত্যাদি। দোকানি হেসে বলল “ট্রেক পে যা রাহে হো ? “আমরা হাসি ফেরত
দিয়ে বললাম “হা”। এরপর হোটেলে এসে সেই ঘুম।
|
ছবি:-
মলরোডের একটি মিষ্টান্ন। |
১৯/০৯/২০১৪
উপরের
তারিখটা দেখে অনেকে হয়তো চোখ কুচকিয়েছেন। এ ব্লগ পোস্টের মাঝের ৫ দিন গেল কই ? হা
আমরা ১৩ তারিখের পরে মানালীর বাইরে একটা ট্রেকে ছিলাম। ট্রেকিংটার গল্প পড়তে চাইলে
আপনাকে আমাদের “হামতা পাস ট্রেকিং” গল্পটা পড়তে হবে। যেহেতু মানালী আমাদের বেসক্যাম্প
ছিল সেহেতু আমরা আবার ফেরত এলাম টানা পাঁচদিনের ট্রেকিং এবং ক্যাম্পিং শেষে। আমরা
মানালী ১৮ তারিখ রাতে ফিরেছিলাম। প্রচন্ড ক্লান্ত থাকায় সেই একই হোটেলের একই রুমে
এসে মড়া লাশের মত ঘুমিয়েছি। সকালে যখন ঘুম থেকে উঠলাম তখন আমরা একেবারে ঝরঝরে। আর
দিনটা ছিল রোদ্রউজ্বল। আমি উঠেই কাপড় ধূয়ে তা ছাদে শুকোতে দিয়ে আসলাম। এবং আর্শ্চয
হয়ে দেখলাম আকাশ খুব পরিস্কার আর চারপাশের সবকিছু খুবই সুন্দর লাগছিল। আকাশে কিছু
প্যারা গ্লাইডারকেও উড়তে দেখলাম। মানালীতে অনেকদিন পর পরিস্কার আকাশ পেয়ে তারা
গ্লাইডিং করছে আকাশে।
|
ছবি
:- পরিস্কার আকাশের জন্য পাহাড়গুলো এখন দেখা যায়। |
|
ছবি:-
প্যারা-গ্লাইডার উড়ছে আকাশে। |
আমরা
সব গুছিয়ে নিলাম। ব্যাগট্যাগ সব প্যাক করে হোটেলে রেখে বাসকাউন্টারে গেলাম সন্ধ্যা
ছাড়া দিল্লীর টিকিট নেই HRTC বাসের। তাই দুটো টিকেট কেটে সেই আইয়্যুসদের ধাবায়
গিয়ে আন্টির হাতের পরটা আর ঢাল দিয়ে পেট ভর্তি করে হোটেলে চলে আসলাম।
|
ছবি:-
সকালের নাস্তা। |
যেহেতু
১২টায় চেক আউট হতে হবে নইলে দুদিনের ভাড়া গুণতে হবে , তাই আমরা হোটেল মালিকের সাথে
কথা বলে ১:৩০ পর্যন্ত সময়ে বাড়িয়ে নিলাম। গোসল করে , রেস্ট নিয়ে আমরা ১:৩০ এ হোটেল
থেকে চেক আউট করলাম। ভারী ব্যাকপ্যাক নিয়ে সন্ধ্য পর্যন্ত ঘুরার মানে হয়না। তাই
আমরা ব্যাকপ্যাক গুলো বাসস্টেন্ডের ক্লোক রুমে জমা দিয়ে নিজেদের কাধ হালকা করলাম।
এবং মলরোড ধরে পেছনের পার্কে টিকিট কেটে ঢুকে পড়রাম। সুন্দর একটা পার্ক। বিশাল গাছ
আর প্রচুর ট্রেইল আছে ভেতরে। শহরের ভেতরে এরকম একটা পার্ক সত্যিই প্রশংশনীয়। পাশে
মাইটি বিয়াসতো বয়ে চলছেই। আমরা ৪-৫ টা পর্যন্ত পার্কেই কাটিয়ে দিলাম সুন্দর
প্রকৃতি আর সুন্দর সুন্দর মেয়ে দেখে।
|
ছবি:-
ঘন গাছপালা । |
|
ছবি:-
অসাধারাণ একটি ট্রেইল ছিল এটি। |
|
ছবি:-
পার্কের ভেতরে এরকম অনেক সাইনবোর্ড আছে। |
মানালীর
এ “ভন বিহার” পার্কটা ভাল লেগেছিল এর পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা আর ছিমছাম দেখে। নিয়ম
কানুন কড়া আর সচেতনতা মুলক বোর্ড সর্বত্র। আমাদের দেশের পার্ক গুলো কখন এরকম নিয়মের
মধ্যে এসে সুন্দর হবে তা আল্লাহই যানেন।
|
ছবি:-
বিয়াস নদী বনের ভেতর থেকে। |
আমরা
আবার মলরোডে ফেরত এলাম। লান্চ এখানের একটা হোটেলেই খেলাম। দামের তুলণায় খাবারের
মান খারাপ ছিল। এরপর বাসের যাত্রার সময় না হওয়া পর্যন্ত মলরোডে বসে বসে মানুষ
দেখতে লাগলাম। প্রচুর টুরিস্ট আসছে যাচ্ছে। নানা দেশের নানান টুরিস্ট। একজনকে
দেখলাম মোটা মোটা টায়ারের বাইসাইকেল নিয়ে হাজির সে দিল্লী থেকে এসেছি আরো উপরে
যাবে বলে।
|
ছবি:-
সেরকম একটা বাইক। |
আমরা
ক্লোকরুম থেকে ব্যাগ সংগ্রহ করে বাসে চড়ে বসলাম। এরপরের স্টপ কুল্লু। কুল্লু
অসাধারণ একটা জায়গা শুনেছি কিন্তু আমরা সেখানে বেশিক্ষন থাকবোনা বলে খারাপই
লাগছিল।
|
ছবি:-
বাসের ভেতরে আমার ব্যাগ। |
বাস
ছাড়ার ৫০ মিনিটের ভেতরেই আমরা কুল্লু পৌছে গেলাম। আর কুল্লুর বাজার আর আশপাস দেখতে
নেমে গেলাম। পাহাড়ে যেন ঝোনাকি জ্বলছে। আসোলে জোনাকির মত বাতি গুলো আর কিছুনা পাড়া
বা গ্রামগুলোর ঘরের বাতি। প্রায় প্রতিটা পাহাড়ে গ্রাম আছে , আর সন্ধ্যার পর যখন
আলো জ্বলে তখন খুব সুন্দর লাগে। মনে হয় যেন পাহাড়গুলোই জোনাকির মেলা বসেছে।
|
ছবি:-
কুল্লুর প্রতিটা পাহাড়ে গ্রাম আছে। |
|
ছবি:-
বাসস্টপের মিষ্টি খাবার। |
মানালী
পর্ব এখানেই শেষ করলাম। পরবর্তিতে চন্দিগড় নিয়ে লিখবো ইন্সোআল্লাহ। নিচের নোটে
কিছু তথ্য যুক্ত করলাম। কাজে লাগতে পারে আপনাদের। কষ্ট করে ব্লগখানা পড়ার জন্য
ধন্যবাদ সবাইকে।
[নোট
:- মানালী যাওয়া আসা খুব সোজা কিন্ত লম্বা যাত্রা কোলকাতা থেকে সোজা কলকা এসে বা
চন্দিগড় এসে বাসে মানালী যাওয়া যায়। ট্রেন ভাড়া কোলকাতা থেকে চন্দিগড় ৯০০ রুপি
থেকে শুরু করে ৫০০০ রুপি পর্যন্ত আছে ক্লাস ভেদে। আর চন্দিগড় থেকে মানালির বাস
ভাড়া ২২০ রুপি থেকে শুরু করে ২৫০০ রুপি পর্যন্ত আছে ক্লাস ভেদে।দিল্লী
থেকে মানালীর জন্য বাস প্রায় সবসময় পাওয়া যায় আজমীরি গেট থেকে। ক্লাস ভেদে ভাড়া
৬৫০ থেকে ৪০০০ রুপি পর্যন্ত।মানালীতে
খাওয়া দাওয়ার খরচ তেমন হয়না। মুটামুটি সস্তা। ধাবার থালি বেস্ট একটা অপশন। তবে
চাইনিজ , থাই সহ প্রায় সব ধরণের রেস্টুরেন্ট আছে। হোটেল
খরচ সিজন অনুযায়ী। আমরা যে হোটেলটায় ছিলাম ৪০০ রুপিদিয়ে সেটা সিজনে ১৫০০ রুপি থেকে
বেশি দিয়ে ভাড়া দেওয়া হয়। মানালীর
ভেতরে চলাফেরা সহজ। সবই মুটামুটি হাটার রাস্তার ডিস্টেন্সে। অটো বা সিএনজি বাড়া
সরকার কতৃক নির্ধারিত আর হাইওয়েতে লোকাল বাস চলে। ]
আমার
অন্যান্য ভ্রমণ গল্প :-১/ ব্যাকপ্যাকিং না
ট্রাশপ্যাকিং ? ২/ ছেঁড়া দ্বীপে
ক্যাম্পিং । ৩/ ক্যাম্পারভ্যানে
নিজের দেশ ঘুরা দেখা। ৪/পকেট চুলা কিভাবে
বানাবেন ?(হাইকিং এন্ড ক্যাম্পিং গিয়ার)
অনেক ভালো লেগেছে পড়ে। ধন্যবাদ
উত্তরমুছুনভাই অসাধারণ একটা ব্লগ লিখলেন। আমি আপনার ব্লগ নিয়মিত পড়ি। আপনার ব্লগ আমার বুকমার্ক এ আছে। আপনার লিখার ধরন আমার খুব ভাল লাগে। পড়তে পড়তে মনে হয় আমিও সে জায়গায় আছি। ধন্যবাদ এই রকম একটা সুন্দর লিখা উপহার দেওয়ার জন্য।
উত্তরমুছুন