২৬ মার্চ, ২০১১
Clemon Ride for Green সিলেট টু ককৃসবাজার বাইসাইকেল টুর।
ফটো ক্রেডিট :- কেউকেরাডং বাংলাদেশ গ্রুপ।
20/10/2010 Eng.
দুপুরে বসে TV দেখছি হটাৎ দেখি Clemon Ride For Green Adds । আকিজ গ্রুপ নামে একটি কম্পাণি বাইসাইকেল Tour আয়োজন করতেছে যা কিনা সিলেটে শুরু হয়ে ককৃসবাজার শেষ হবে। আমি খুব আগ্রহী হলাম। আমি একজন সাইক্লিস্ট চট্রগ্রাম থেকে। ছোঠ আনেক টুর আমি এর আগেো করেছি। তাই সিলেট হতে ওদরে চট্রগ্রাম আসার আপেক্ষা করতে লাগলাম। আর আমি নিজেকে প্রস্তত করতে লাগলাম।
৩১/১০/২০১০ সাল
দুপুর বেলা দুইটার দিকে সাইক্লেইস্ট রা সাইকেল চালিয়ে চট্রগ্রামের দিকে আসতে লাগলো। তারা ২৫ তারিখ রওনা দিয়েছিল। আমি চট্রগ্রাম সিটি গেটের কাছে বসে ছিলাম তাদের আগমন দেখার জন্য। প্রথমেই একজন সাইক্লিইস্ট দেখলাম
ক্লেমন জাসি্ পরা। তিনি পরিচয় দিলেন হাযলুল ইসলাম বলে। বাংলাদেশের একজন সাইক্লিইস্ট। এর পর একে একে বাংলাদেশের ৬৪ জেলা ঘুরে ফেলা সাইক্লেইস্ট সাইদ, এর পর রাজেস ভাই রাসেল আরো আনেকে আসলো। সবাই একসাথে কিছু ছবি তুললাম। এর পর আমি তাদের গাইড করে নিউ মার্কেট সংলগ্ন বাইক কম সাইকেল সপে আনলাম।
ও খানে তারা খাওয়া ও থাকার ব্যাবস্থা করলো। আমি ওই দিনের মত বিদায় নিলাম তাদের কাছে।
০১/১১/২০১০ সাল
সকাল ছটায় আমি সাইকেল এবং আমার Jumira ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে গেলাম বাসা থেকে। আমার জিনিসের লিস্ট হলো:-
১/ Coyote এর একটি ভারি বাইসাইকেল।
২/ একটা পানির ক্যান।
৩/ সাইকেল সারার কিছু যন্ত্র।
৫/ ৪ টা T-Shirt।
৬/ ১টি সানগ্লাস।
৭/ একটি ডায়েরী এবং কলম।
৮/ কিছু কাগজ।
৯/ রুমাল এবং একটি গামছা।
১০/ কিছু ব্যাথা নাশক ট্যাবলেট এবং ব্যানডেজ।
১১/ Nokia E63 মোবাইল জিপি ১ জবি নেট সহ। চার্জার ২ পিন।
১২/ হুমায়ন আহমেদের কিছু বই।
১৩/ আমার ডাচ বাংলা ব্যাংক কার্ড এবং পাসপোর্ট সহ কিছু ID কাগজ।
১৪/ জুমাইরা ব্যাগ।
১৫/ একজোড়া কের্ডস এরং সেন্ডল।
আমার বাসা থেকে স্টেডিয়াম ৭ কিলোমিটার দুর।যেখান থেকে ককৃসবাজার রওনা
দিবে পুরো দল। পথে আমার সাইকেল কিছু মেরামত করলাম CRB Railway এরিয়া হতে।
আমি যখন পোছলাম তখনো কেউ আসেনি শুধু আমার বন্ধু সজ্ঞয় কুমান ছাডা। ও আমাকে বিদায় জানাতে এসেছে। কিছুকক্ষন পর একে একে হোটেল থেকে সবাই আসলো। কারো মুখে ক্লান্তির ছাপ নেই গত কয়েক দিনের রাইডিং এর। হোটেল থেকে সবাই যখন আসলো আমরা দলে তখন আনেক । বিদেশি সাইকেল ভ্রমনকারি সাইক্লিস্ট ও আছে বেশ কয়েক জন এর মধ্যে Phil Bukley,Omar,William,Namoi Dickson আনেকের সাথে পরিচয় হলো।
প্রথমে আমার রেজিস্ট্রেশন হলো। এর পর ক্লেমন জার্সি এবং ক্যাপ দেওয়া হলো।
পানি এবং বেশ কিছু ড্রিংকস দেওয়া হলো। সব আকিজ গ্রুপ থেকে।
যাত্রা শুরু হলো ১০ টা বাজার কিছু আগে। ৩য় কর্ণফুলী ব্রিজ সহ নানা জায়গা পিছনে ফেলে আমরা এগিয়ে যেতে লাগলাম। আনেক মজা হলো। আমাদের সাথে সবসময় Ambulance এবং অন্যান্য যান থাকতো।
প্রতি ২০-৩০ কিলোমিটার যাওয়ার পরে আমাদের ড্রিংকস,পানি,বিস্কিটি,চিপস,কলা,খেজুর ইত্যাদি দেওয়া হলো।
আমরা পটিযা সহ নানা জায়গা ফেলে কেরানির হাট পৈছলাম বেলা ২:৪৫ এর দিকে। একটা বিরাণী হাউজে Lunch করে রেস্ট নিলাম বিল আকিজ গ্রুপই দিল।
প্রথম প্রথম সাইকেল চালাতে কষ্ট না হলেও রোদ ওঠার পর একটু কষ্ঠ হলো। কিন্তু নামলো বৃষ্টি । দোকান থেকে পলিথিন কিনে ব্যাগ ঢাকলাম এবং চকরিয়ার জন্য রোনা দিলাম। আমি সবসময় Google Maps দিয়ে আমি চেক করতাম আমি কোন ভুল পথে কিনা। সবসময় Ambulance এবং অন্যান্য যান যা থাকতো তা হর্ঠৎ করে বন্ধ হয়ে গেল।এদিকে রাজেস ভাইর সাইকেল পংচার । এক ষন্টা নষ্ট।সবার থেকে পিছিয়ে পড়লাম।তাই Google Maps ই ভরসা। সঠিক পথ এবং পথের দুরত্ব Google Maps এর মাধ্যমে বের করতাম। চলতে চলতে একসময় আমি একা হয়ে গেলাম। সাইকেল আর আমি একা রাস্তায় না মানুষ একটা কুকুর ও নেই। একসময় রাত নামলো । নিজের হাত দেখাযায়না এমন অন্ধকার।তবুও চলছি। খুব ভয়ে আছি। পথ যেন ফুরায়না। একটি বাজার পড়লো। নাস্তা সারলাম পেট্রোল পাম্প এর সামনে। মানুষ জন ঘিরে ধরলো কতো তাদের প্রশ্ন। এর পর একের পর এক বাজার ফেলে আসলাম । পথ শষে হয়না। ভয় , ক্লান্তির শেষ সিমায় আমি তখন। কিভাবে যে আমি চকরিয়া পৈাছলাম আমি যানিনা।
হাজলুল ভাই আমাদের থাকার ব্যাবস্থা করলেন একটা মহিলা কলেজে।সে কি এক অভিজ্ঞতা। আমরা গোসল করে পরিস্কার হয়ে ডিনার করলাম। আমার জীবনের সবচেয়ে কম কস্টের ডিনার যা অমৃত স্বাদের গরুর গোস এবং সবজি ডাল দিয়ে।
রাতে মহিলা কলেজে ষুমাতে গেলাম। ঘুম কি আর হয়।
২/১০/২০১০ সাল
সকাল সকাল আমরা বের হয়ে গেলাম কারণ একটু পর কলেজে ক্লাস শুরু হবে তাই ছাত্রিরা আসা সুরু করবে। ওরা আমাদের দেখার আগেই আমরা চম্পট।
৯:৩০ সকালে আমরা যাত্রা করলাম ককসৃবাজার এর জন্য।
পথের দৃশ্য আমাদের আবাক করলো। এত সুন্দর।
সবার আগে হাজলুল ভাই এবং রাসেল ভাই পৈছাল ককৃসবাজারে এর পর আমি এবং তারও ৩০-৪৫ মিনিট পর একে একে সবাই। সবাই একত্রে লাবণী বিচে ডুকলাম। আমাদের ফুল দিয়ে বরণ করা হলো। সবাই একত্রে সমুদ্রে গোসল করলাম। Lunch করলাম Dimond Hotel এ। ককৃসবাজারের প্রতিটি মানুষ আমাদের দেখছিল। আমরা তখন হিরো। বিকালে আনুষ্ঠান হলো এবং সবাইকে পুরস্কার দেওয়া হলো। সন্ধ্যায় ফায়ারোয়ার্কর্স।
রাতে সিগাল এর সামনের বিচে আমাদের জন্য BBQ Part (বারবিউ কিউ) আয়োজন করা হলো। আনেক মজার ড্যান্স হলো এবং দারুন একখান খানাপিনা।
১২ টা রাতের তখন আমি বিদায় নিলাম সবার কাছে। উঠলাম এক বন্ধুর বাসায়।
৩/১০/২০১০ সাল।
সকাল সকাল উঠে ঢাকা হোটেল গেলাম। ওখনে হাজলুল ভাই , রাজেস ভাই, এবং রাসেল ভাইকে নাস্তা খেতে দেখলাম। তার তখনি ঢাকা রওনা দিলো।
ককৃসবাজারে তখন আমি একা আমার সাইকেলের সাথে। আমি ১২:৩০ এর সময় মেরিন ড্রাইভ গেলাম অবশ্যই সাইকেল চালিয়ে দারুন দারুন। এরপর হিমছড়ি হয়ে ইনানি বিচ। দারুন একটা দিন কাটলো। নাস্তা করলাম পথের একটা হোটেল-এ।
বন্ধুর বাসায় বিদায় নিয়ে উঠলাম সি-ককৃস হোটেল এ দিন প্রতি ৩০০ টাকা ভাড়া রূমে। রুমটা দারুন ছিল AC সহ। আমি লম্বা একটা ঘুম দিলাম । সন্ধ্যায় উঠে সাইকেল নিয়ে বিচে গেলাম। একটা বিচ সাইড বেড ভাড়া করে ৩ ঘন্টা কাটালাম।
জীবনে ঐ মুহত্ব গুলো ভুলবনা।
৪/১০/২০১০ সাল
বাসে করে বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা। আমার সাইকেল এর জন্য Extra ১০০ টাকা নিল ওরা। পথে রাস্তা দেখি আর ভাবি কত কি করলাম এ কয়দিন।
দিন আর মুহ্ত্ব আমি কখনো ভুলবনা।
বিস্তারিত ছবির জন্য এখানে Click করূন।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন