হটাৎ করেই প্লান। যেহেতু আগে আমার সেন্টমার্টিনে ক্যাম্প
করা হয়েছে তাই এবার প্লান হলো আমরা প্রথম দিন সেন্টমার্টিন হয়ে সোজা ছেঁড়া দ্বীপে
গিয়ে ক্যাম্প করবো।যাওয়ার আগে অনেক কে বললাম যাবে কিনা। কিন্তু হাতে সময় ছিল মাত্র
২৪ ঘন্টার ও কম। তাই অনেকেরই ইচ্ছা থাকলে যাওয়া হলোনা। যদিও আমি লিমিট দিয়েছিলাম ৪
জনের বেশি কোনভাবেই নই। তো জুমন ভাই টিকিট কাটলো। দুটা টিকিট সেই রাত দুটার বাসের।
[নোট:- চট্রগ্রাম থেকে গভীর রাতে অনেক বাসই টেকনাফ যায়। সোদিয়া এস আলম এর ২ টার পর দুটা বাস টেকনাফের উদ্দেশ্যো ছাড়ে। আর শাহ আমিন সার্ভিসের একটা বাস। এস আলমের ঔই
বাস দুটার টিকিট কাটতে হলে আপনাকে সিনেমা প্যেলেস এর মোড়ের ( ন্দনকানন ) এর সোদিয়া কাউন্টারে যেতে হবে
, বাস দুটাই প্রতিদিন
রাতের ২ থেকে ২:৪০ এর মধ্যে ছেড়ে যায়। শাহ আমিন বাসের
মেইন অফিস দেওয়ান হাটে। দুই কম্পানির বাসের টিকিটই ৪০০ টাকা জনপ্রতি। তো প্রশ্ন করতে পারেন রাতের ২
টাই কেন টেকনাফ যাবো ? ভোরে নই কেন?
কারণ সেন্ট মার্টিনের জন্য টেকনাফ দমদমিয়া ঘাট থেকে সব জাহাজ
বা ভেসেল সকাল ৯:৩০ এর মধ্যেই ছেড়ে যায়। রাতের বাসে
উঠলে আপনি ঠিক সময়ে পোছে যাবেন। অন্যথায় মাছ ধরার বা যাত্রি টানার
সার্ভিস ট্রলারে যেতে হবে। ট্রলার যাত্রা এডভেন্চার হলেও ,
গভীর সমুদ্রে খুবই বিপদ জনক। ]
০৬/ ফেব্রুয়ারী/২০১৩
-----------------------------------------------------------------------------
রাত তখন প্রায় ১২টা-১টা হবে। আমি আর জুমন ভাই নন্দন কানন
এর বাস কাউন্টারের সামনে বসে বসে চা খাচ্ছি। জুমন শুরু করলো তার চির চারিত খাবারের
গল্প। সে নাকি আজ রাতে কোথা থেকে বিরিয়ানি খাইছে। এই সেই। আমি বচোরা বাসা
থেকে কিছু না খেয়েই বের হইছি।
রাত ২:২০ মিনিটে বাস ছাড়লো। এক ঘুমে সকাল। চোখ খুলে দেখি আমরা উখিয়া পার হচ্ছি। এক পাশে পাহাড় অন্য পাশে নদী। আমরা জাহাজ ঘাটে নামলামনা। কারণ আমাদের উদ্দেশ্য আমরা টেকনাফ হয়ে শাহ পরির দ্বীপে যাবো। এরপর সেন্টমার্টিন। টেকনাফ নেমেই একটা হোটেলে নাস্তা খেয়ে নিলাম। এরপর সিএজি যাত্রা। অবশ্যই লোকাল সিএজি। টেকনাফ থেকে সোজা শাহ পরির দ্বীপ যাবে। সিএজিতে উঠে পড়লাম। এডভেন্চার শুরু। আমার এপর্যন্ত দেখা সবচেয়ে সুন্দর রাস্তা এই শাহ পরির দ্বীপের যাওয়ার রাস্তা। একপাশে সমুদ্র। অন্য পাশে গ্রামের পর গ্রাম। জোয়ার ভাটায় এ রাস্তা খোলে বন্ধ হয়। মজা না ? প্রকৃতি যেন পাহারাদার এ রাস্তার। তার ইচ্ছা মতে চলে সব এখানে। সিএজি ভাংগা নামে একটা জায়গায় এসে থেমে গেল। সামনে যাওয়া আর সম্ভবনা। আমি আর জুমন নেমে গেলাম। প্লেসটার নাম “ভাংগা” কেন হলো সাথে সাথে বুজতে পারলাম। রাস্তা না ছাই। পুরা পানির নিচে। কংক্রিটের রাস্তাটা দেখায় যায়না। ছোটো একটা বাঁশের সাকো দিয়ে ও পারে গিয়ে আরেকটা সিএনজিতে উঠতে হবে। জোয়ার আসলে এ সাকোও নিরাপদনা।
রাত ২:২০ মিনিটে বাস ছাড়লো। এক ঘুমে সকাল। চোখ খুলে দেখি আমরা উখিয়া পার হচ্ছি। এক পাশে পাহাড় অন্য পাশে নদী। আমরা জাহাজ ঘাটে নামলামনা। কারণ আমাদের উদ্দেশ্য আমরা টেকনাফ হয়ে শাহ পরির দ্বীপে যাবো। এরপর সেন্টমার্টিন। টেকনাফ নেমেই একটা হোটেলে নাস্তা খেয়ে নিলাম। এরপর সিএজি যাত্রা। অবশ্যই লোকাল সিএজি। টেকনাফ থেকে সোজা শাহ পরির দ্বীপ যাবে। সিএজিতে উঠে পড়লাম। এডভেন্চার শুরু। আমার এপর্যন্ত দেখা সবচেয়ে সুন্দর রাস্তা এই শাহ পরির দ্বীপের যাওয়ার রাস্তা। একপাশে সমুদ্র। অন্য পাশে গ্রামের পর গ্রাম। জোয়ার ভাটায় এ রাস্তা খোলে বন্ধ হয়। মজা না ? প্রকৃতি যেন পাহারাদার এ রাস্তার। তার ইচ্ছা মতে চলে সব এখানে। সিএজি ভাংগা নামে একটা জায়গায় এসে থেমে গেল। সামনে যাওয়া আর সম্ভবনা। আমি আর জুমন নেমে গেলাম। প্লেসটার নাম “ভাংগা” কেন হলো সাথে সাথে বুজতে পারলাম। রাস্তা না ছাই। পুরা পানির নিচে। কংক্রিটের রাস্তাটা দেখায় যায়না। ছোটো একটা বাঁশের সাকো দিয়ে ও পারে গিয়ে আরেকটা সিএনজিতে উঠতে হবে। জোয়ার আসলে এ সাকোও নিরাপদনা।
ছবি:- সিএজি আমাদের এরকম একটা প্রেসে নামিয়ে দিল। |
ছবি:- এই সেই সাকো। ওয়ান ওয়ে রোড। |
ছবি:- স্থানীয়দের কষ্ট দেখে কে? জোয়ারের পানিতে সব ভেসে গেছে। |
ছবি:- শাহ পরির দ্বীপ জেটি ঘাট। অনেক লম্বা ঘাট। |
ঘাটের পাশেই এক দোকানে চায়ের অর্ডার দিলাম। দোকানদার বলল
বারমিজ মোমো খাবে কিনা? মোমো ? সেটা আবার কি ? দেখি গরম পানিতে কি এক চিজ গুলিয়ে
দিয়ে দিলো। সেটাই নাকি মোমো। ওই বারমিজ পিকুলিয়ার জিনিস খেতে লাগলাম, আর দুরে
বামিজ/ মিয়ানমার দেখতে লাগলাম।
ছবি:- বারমিজ মাল। :P
|
আমরা ঘাটের একেবারে শেষ মাথায় ছাউনি টাইপের একটা স্থানে
সার্ভিস বোটের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। দুজন বিজিবির সদস্য এসে প্রশ্ন করলো “ হু আর ইউ ?
হয়ার আর ইউ ফর্ম ?” আমিতো আবাক! বেটা ইংলিশে প্রশ্ন করল কেন ? আমি শুদ্ধ বাঙলায় বললাম “আমরা
সেন্টমার্টিনে যাব। লোকাল ট্রলারে।“ আমার মুখে সে বাংলা শুনে সে মনেহয় একটু মর্মাহত হলো। আমরা ঘাটে অপেক্ষা
করতে লাগলাম। মিয়ানমার থেকে একটা বোটে করে প্রচুর গরু এলো। নামানো হলো। এরি ফাঁকে
এক স্পিডবোট ড্রাইভার কয়েকবার এলো তার স্পিডবোটে করে সেন্টমার্টিনে যাওয়ার জন্য।
অনেক কম টাকাতেই যেতে চাইল। কিন্ত আমাদের এক কথা। ট্রলার / মাছ ধরার বোটেই যাবো।
মজা বেশি। হটাৎ দেখি কেয়ারী সিন্দেবাদ
জাহাজ , ক্রুজ এন্ড ডাইন জাহাজ জেটির পাশ দিয়ে যাচ্ছে। দুর থেকে দেখলাম জাহাজ
গুলোর সেন্টমার্টিন যাওয়া। মনে মনে কইলাম , আমরাও আইতাছি খাড়া।
একসময় সার্ভিসের বোট আসলো। অনেক লেট। মাল পত্রে বোঝাই।
তাই তাড়াহুড়া করে উঠে রওনা দিলাম আমরা। সেন্ট মার্টিন যাত্রা শুরু শাহ পরির দ্বীপ
থেকে।
সেন্টমার্টিনে যখন পৌছলাম তখন মাঝ দুপুর। গরমও পড়ছে । আমরাদের
উদ্দেশ্য ছিল ছেড়া দ্বীপে হেটে হেটে যাওয়া । রাতে ওখানেই ক্যাম্পিং। তাই সেন্ট
মার্টিনে সময় নষ্ট করলামনা। ( আমার সেন্ট মার্টিনে ক্যাম্পিং এর গল্পটা পড়তে পারেন এখানে Click করে। ) কিছু ডিম , পনি , খাবার কিনে ডেইল পাড়ার ভেতর দিয়ে বের হয়ে বালুর
সৈকতের পাশ ঘেষে হাটা দিলাম। নাক বরাবর হাটা । উদ্দেশ্য বাংলাদেশের শেষ বিন্দু ,
ছেড়া দ্বীপ। পথে প্রচুর ছবি তুললাম আর ডাব খেলাম।
ছবি :- নাক বরাবর হাটা শুরু। |
ছবি:- মরা কোরাল। |
রাস্তা হটাত করে পরিবর্তণ হতে লাগলো। মজার নরম বালুর
সৈকতটা হটাৎ করে পাথুরে হয়ে গেল। হাটতে কষ্ট হচ্ছিল। সময়ও নষ্ট হচ্ছিল।
পথ যেভাবে কঠিন হয়েছিল ঠিক আবার সেভাবেই হটাৎ করে সুন্দর
হয়ে গেল। অপরুপ দৃশ্য দেখতে দেখতে আমরা এগিয়ে চললাম। পথেই আমরা একটা দরজা পেলাম।
যেটার ওখানে কোন মানে নাই। অবাক কান্ড! আগে পিছে আশে পাশে কিছু নেই শুধু একটা
দরজা। আমরা নাস্তা সেরে নিলাম ডিম ভেজে আর বিস্কুট আরো কিছু খাবার খেয়ে।
ছবি:- ডিম পোস্ট। |
আমরা যখন ছেড়া দ্বীপে পোছলাম তখন প্রায় সন্ধ্যা। সুর্য
ডুভছে। আমি আর জুমন মিলে দ্বীপের একপাশে ঝাউ বনে ক্যাম্প সেট করলাম। স্থানিয় একজন
এসে ভয় দেখালো টাকা দিতে হবে নইলে থাকতে দেবেনা। আমরা পাত্তা দিলামনা। একেবারে
বিচের পাশে ক্যাম্প বা তাবু না ফেলে একটু ঝাউ বনের পাশে ঘেরা জায়গায় ক্যাম্প
ফেল্লাম।
আমরা রাতে নুডুলর্স আর কফি খেয়ে অনেক্ষন গল্প করলাম। হটাৎ
মানুষের গলার আওয়াজ পেলাম। আমরা ভাবলাম হয়তো সেই লোকালরা আমাদের খুজছে। একটু ভয়
লাগতেছিল। আমি সাহস করে ঝাউ বনের ভেতর ঢুকে দেখতে গেলাম ঘটনা কি। জুমন ভাই অনেক
মানা করার পরও। গিয়ে দেখি কিছু স্থানীয় জেলে ক্যাম্পফায়ারের মত আগুন ধরিয়ে জাল
সেলাই করতেছে।আমাকে তারা দেখেনি। আমি এসে জুমনকে বললাম। এরপর রাত হলে আমরা ঘুমাতে
গেলাম। বাইরে অনেক বিচিত্র বিচিত্র আওয়াজ হচ্ছিল। সে সব শুনতে আর সমুদ্রের গর্জন
শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে গেলাম। ভোরে ঘুম ভাংলো। জুমন নাকি একদমি ঘুমাতে পারলোনা। কোন
শব্দ হলেই চমকে উঠে। আমার ভালই ঘুম হলো।
০৭/
ফেব্রুয়ারী/২০১৩
-------------------------------------------------------
আমি যখন নাস্তা বানাচ্ছিলাম , তখন জুমন কোন ঝোপের আড়ালে
তার পেট খালি করছিল :P । গরম দুধ , কিসমিস , বাদাম দিয়ে লাচ্ছি সেমাই দিয়ে নাস্তা সেরে কিছু ফটো
তুলে আমরা রওনা দিলাম দ্বীপের আরেক পাশ দিয়ে সেন্টমার্টিনে যাবো বলে। জোয়ার আসলে
আর যাওয়া হবেনা। পানি চলে আসবে। তাই দ্রুত করতে লাগলাম।
আমরা রওনা দিতে গিয়ে দেখি পানি বেড়ে গেছে। কাল যে রাস্তা
দিয়ে আমরা পানি না ছুয়েই আসছি। আজ সেখান দিয়ে কিছু জায়গায় কোমর পানি। যোয়ারের সময়
যে।
ছবি:- জোয়ার আসছে। পানি বন্ধ করছে রাস্তা। |
ছবি:- ছোট্ট একটা দ্বীপ। |
ছবি:- বোট। |
ছবি:- বোট। মমুদ্রে যাওয়ার অপেক্ষায়। |
আমরা গোসোল করার জন্য জায়গা খুজতেছিলাম। স্থানানীয় একটা
লোক একটা সৈকত দেখিয়ে বলল এখানে গোসোল করতে। পানি ভাল। আমরা দেখলাম আসোলোই জায়গাটা
খুবই ভাল গোসল করার জন্য। প্রায় ১ ঘন্টা আমরা দপা দপি করলাম পানিতে।
এরপর আমরা সেন্ট মার্টিনের পরিচিত আংকেলের রিয়াদ গেস্ট
হাউজে পরিস্কার হলাম। টিউবওয়েলের নিচে কুইক একটা গোসোল করলাম। উনারি হোটেলে খেয়ে
নিলাম। এবার ফেরার পালা। জেটিতেই জাহাজ দাড়ানো ছিল। প্রায় সব গুলা জাহাজেই উঠে
টিকিট কাটতে ট্রাই করলাম। একটা ১৫০ করে দুটা
টিকিট কেটে উঠে পড়লাম। এবার বাড়ীর পথ ধরবো। অসাধারণ টুরটা শেষ। যদিও আমাদের
আরেকদিন শাহ পরির দ্বীপে তাবু তে ক্যাম্প করার কথা ছিল । কিন্তু হটাত চট্রগ্রামে
জরুরী কাছ পড়ায় চলে এলাম।
[ নোট:- আমার প্রতিটা পোস্টের শেষে নোট থাকে , কিভাবে
যাবেন কিভাবে কি করবেন। এটাতে আর লিখলামনা। কারণ আগের পোস্টে সেন্টমার্টিন
ক্যাম্পিং এর গল্পে সব বলছি। আর কতবার বলবো? আগের পোস্ট পড়তে এখানে Click করুন।
শুধু মনে রাখবেন ক্যাম্পিং এ গেলে বা এমনি ঘুরতে গেলে
কোন ময়লা , প্লাস্টিক ইত্যাদী দ্বীপে ফেলে আসবেননা। কোথাও ফেলে আসবেননা। জায়গা
গুলোর সৈন্দয্য রক্ষা করা আমাদের দায়ত্ব। ]
Thanks for reading.
উত্তরমুছুনSairokom,,,bar bar jaite mon chai..Amar jiboner sera muhorto gular akta...Onek donnobad..Sob kicu notun bave mone pore gelo..:)
উত্তরমুছুনআমার সাথে থেকে সাপোর্ট করার জন্য থ্যাংকস। আপনি না থাকলে কিছুই হতোনা। ধন্যবাদ মেন। আবার যাবো। এবার পাহাড়ে।
মুছুনvi,
উত্তরমুছুনapnar shate gurte jate mon chay
apni moja korte janen. :)
prokriti shobaike ai goon ta daye na.
apni allah ar kase shukria aday korben.
একদিন সময় করে জয়েন করে ফেলুন আমাদের সাথে।
মুছুনbah, besh valo laglo chobi ar likha pore...jumoner shate amar abar nepal a porichoy hoilo....aha kori kokhono akshate berate jabar shujog hobe ar upner likhay amio thakbo....carry on, i appreciate, amader ghuraghurir joy hok...
উত্তরমুছুনমুন ভাইয়্। হবে আবার দেখা। চলেন আবার আগের মত একসাথে সিলেট থেকে কক্সবাজার বাইক চালাই। :D
উত্তরমুছুনvai fb id den
উত্তরমুছুনvai apnar fb id den amio join korbo apnar sate.
উত্তরমুছুন